আপনারা হয়তোবা সবাই শুনেছেন, এই দুনিয়াতে যা কিছু ভালো কিংবা মন্দ হয় সবকিছুই সৃষ্টি কর্তার ইচ্ছায় হয়। মানুষের হাতে কিছুই নেই। এখন অবশ্য আপনারা প্রশ্ন তুলতে পারেন "এটা নতুন কি? " অবশ্যই ঠিক। না তো এই তথ্য নতুন না আমি আপনাদের সাথে কোন নতুন তথ্য উপস্থাপন করতে এসেছি। কিন্তু এই কথাটিকে যদি আমরা একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ দিয়ে ভাবার চেষ্টা করি তবে কেমন হবে? এটাই আমার এই লেখার মূল বক্তব্য।
মানুষ ঠিক কার কর্মের ফল ভোগ করে?
একটি প্রশ্ন যা আমার মনে বারবার উঁকি দিচ্ছে এবং তার উত্তর জানা খুব জরুরী হয়ে পড়েছে তা হচ্ছে, যা কিছুই হয় ভালো বা খারাপ সব সৃষ্টিকর্তা করেন, তবে মানুষ ঠিক কার কর্মের ফল ভোগ করে? এই প্রশ্নর জন্য এটা ভাববেন না যে আমি সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতার উপরে কোনো বিতর্ক করতে এসেছি। বরং আমি জীবনের কিছু এমন দৃষ্টিকোণ কে সামনে আনতে চাই যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সোজাসাপ্টা যদি ভাবি তবে আমাদের মনে যা আসে তা হল, সৃষ্টিকর্তা মানুষের মত কোন কর্ম করেন না, বরং কর্ম সম্পাদনের জন্য একটি পরিস্থিতি তৈরি করেন। এখানে মানুষ কেবল সেই পরিস্থিতির সুবিধা কিংবা অসুবিধা ভোগ করে। তারপর মানুষই নিজের মতো করে সেই পরিস্থিতির নিরূপণ করে। সবসময়ই মানুষের বিশ্লেষণগুলো হয় তার নিজের মতো করে। এমনকি ওই কর্মের ফলকেও নিজের সুবিধামতো স্বকার্যে লাগায়। যখন মানুষ কোন ভুল কাজ করে, তখনো নিজেকে সমর্থন করতে থাকে এই বলে যে, তার কোন ভুল ছিলনা। এর জন্যই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা এবং মানুষের আত্মপক্ষ সমর্থন পরস্পরবিরোধী হয় কারণ এমনও তো হতে পারে যে সৃষ্টিকর্তা মানুষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য প্রোগ্রামিং করেননি। আর যখন মানুষ তার ভুলগুলোকে সঠিকে রূপান্তরের চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে যায়, শুদ্ধি আর ভুলের মধ্যকার পার্থক্য ভুলে যায় ঠিক তখনই এটি তাঁর কর্ম হয়ে যায় যার সাজা সে কর্মফল হিসেবে ভোগ করে। আর যখন মানুষ তার ভুল কর্মের সাজা পায় তখন সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতা কে প্রশ্ন করে।
সুখের সন্ধান
জানিনা কেন তবে একটি কথা নিশ্চিত রূপে বলা যায় যে, মানুষ যে যেখানে আছে, যেভাবে আছে, যেই পরিস্থিতিতে আছে তাতেই অনেক সুখী থাকাই স্বাভাবিক। তবুও জানি না সকল মানুষ ঠিক কোন সুখের পিছনে দৌড়াচ্ছে! এবং জীবনের এই দৌড়ে এসে অনেক কিছুই পায়, কিন্তু তারপরও কিছুনা কিছু পাওয়া সব সময় তার জীবনে বাকি থেকে যায়। এই ভিত্তিতে এটা বলা যায় যে, জীবনে খুব কম লোকই সুখী। আমরা সবাই সুখী হবার ভান করি, সদম্ভে অন্যের সামনে নিজের সুখের উপকরন গুলকে জাহির করি। কিন্তু আমরা সবাই ভেতর থেকে অনেক দুঃখী। মজার বিষয় হলো আমরা কেন দুঃখিত আমরা কেউই জানিনা। আমাদের মধ্যে হয়তো বা কেউই জানে না যে সে প্রকৃতপক্ষে কি চায়। এবং কি পেয়ে সে চির সুখী হতে পারবে। কারণ উপর থেকে যদি এই বস্তুবাদী জীবনকে দেখি তবে আমরা এটাই বলব যে সবকিছুই তো পেয়েছি! বিলাসিতা, উচ্চ পদমর্যাদা, ক্ষমতা, সামাজিক মর্যাদা সবকিছুইতো আছে! তবে দুঃখ কোন কারনে? তবে সত্যিই কি আমরা এই সকল সুখকে খুঁজে বেড়াচ্ছি? এগুলোকে না পেয়েই কি আমরা দুঃখী? বন্ধুরা, এইসব তো ওই সুখের উৎস যা ক্রয়যোগ্য কিংবা পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা পেতে পারি কিন্তু একটি সুখের সন্ধান আছে যা ভালোবাসা দিয়ে, প্রশংসা দিয়ে, কৃতজ্ঞতা দিয়ে কিংবা সাধারণভাবে কারো যত্নের মাধ্যমে মেলে। কিন্তু এটি সবার ভাগ্যে জোটে না। মানুষ অর্থ, মর্যাদা, ক্ষমতা পাওয়ার পরও এই সুখের পেছনে ছুটে বেড়ায়। এজন্যই সে দুঃখী থেকে যায়। বন্ধুরা, তবে আমরা এইটি বলতে পারি সুখের রাস্তা মার্কেট, রাজপ্রাসাদ বা কোন প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে যায় না বরং মানুষের হৃদয় থেকে শুরু হয়ে অন্য মানুষের হৃদয়ের মধ্যে দিয়ে যায়।